জুরুরি খবর
করোনা মহামারির মধ্যেও অর্থনীতির জন্য একমাত্র সুখবর প্রবাসীদের রেমিটেন্স প্রবাহের গতি। জুন মাসে আসা রেকর্ড পরিমাণ রেমিটেন্সে ভর করে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছাড়িয়েছে ৩৬ বিলিয়ন ডলার। অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়া ও চাকরি হারানোর শঙ্কায় থাকা শ্রমিকরা জমানো অর্থ পাঠানো শুরু করায় বেড়েছে রেমিটেন্স প্রবাহ। চাকরি হারানো বিদেশ ফেরত শ্রমিকদের দক্ষতা অনুযায়ী স্থানীয়ভাবে কর্মসংস্থানে বিশেষ পদক্ষেপ নেয়ার তাগিদ দিচ্ছেন অর্থনীতিবিদরা। সেইসাথে বিদেশী আয় উৎপাদনশীলখাতে বিনিয়োগের পরামর্শ তাদের।
করোনা মহামারিতে বিপর্যস্ত অর্থনীতিতে রপ্তানি বড় ধরনের হোঁচট খেলেও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স বৈদেশিক মুদ্রার আয়ে প্রবৃদ্ধি ধরে রেখে অর্থবছর শেষ করলো। ২০১৮-১৯ এর চেয়ে প্রায় ১১শতাংশ বেড়ে সদ্যবিদায়ী অর্থবছরে মোট রেমিটেন্স এসেছে ১৮ দশমিক ২৩ বিলিয়ন ডলার। আর জুনে দেশের ইতিহাসে একমাসে সর্বোচ্চ ১৮৩.৩ কোটি ডলার প্রবাসী আয় আসে। মে মাসে যা ছিলো ১৫০.৩ কোটি ডলার। তবে রেমিটেন্স বাড়লেও প্রবাসে ভালো নেই শ্রমিকরা।
প্রবাসী একজন শ্রমিক বলেন, 'সাড়ে ৩ মাস আমাদের কোনো কাজকাম ছিলো না। অনেক কষ্টে আমরা দিন কাটাচ্ছি।'
আরেকজন বলেন, 'যা জমানো ছিলো তাই পাঠাচ্ছি।'
রামরু চেয়ারপার্সন ড. তাসনিম সিদ্দীকি, যারা বিদেশে আছেন এবং যারা জানেন ওখানে থাকতে পারবেন না। যাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে রিনিউ হবে না তারা দীর্ঘদিন বসে যে সঞ্চয় করেছেন সেগুলো দেশে পাঠাচ্ছেন। এ কারণেই রেমিটেন্সে প্রবাহটা আর্টিফিশিয়ালি বেশি।'
দেশীয় কয়েকটি গবেষণা সংস্থা বলছে, ১৪ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশী কাজ হারিয়েছেন করোনার প্রভাবে। এর একটি অংশ দেশে ফিরেছেন, বাকিরাও সামনে ফেরার অপেক্ষায়।
রামরু নির্বাহী পরিচালক সানেম ড. সেলিম রায়হান বলেন, এখনি নীতিনির্ধারকদের উচিত এই ব্যাপারে একটা কর্মসূচি নেওয়া, পরিকল্পন গ্রহণ করা। বিশেষ করে বিদেশ থেকে যে শ্রমিকেরা ফিরছেন তারা যে দক্ষতা নিয়ে ফিরছেন সেটি আমাদের অর্থনীতিতে কাজে লাগাতে পারি কিনা বিষয়টিতে নজর দিতে হবে।'
বিদেশ ফেরত শ্রমিকরা বাড়িঘর বা জমি কেনার মত অনুৎপাদনশীল খাতের পরিবর্তে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, কৃষিখামার গড়ে তুললে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ সায়মা হক বিদিশা।
করোনা বিপর্যয়ে বাংলাদেশে রেমিটেন্স আয় ২০২০ সালে ২০১৯ এর তুলনায় ২২ শতাংশ কমে ১ হাজার ৪ শ' কোটিতে নামতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছিলো বিশ্বব্যাংক, যদিও বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে বছরের প্রথম ছয় মাসে এসেছে ৮ শ' ৭৯ কোটি ডলার।
Tags
দেশের খবর